Dameshwar Shiva Mandir, Tufanganj, Cooch Behar
বড় মহাদেবের ধাম (দামেশ্বর শিবমন্দির )
বারোকোদালী ,তুফানগঞ্জ,কুচবিহার ।
কুচবিহার জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের ধর্মীয় পীঠস্থান মন্দির বা দেবালয়গুলি সভ্যতা,সংস্কৃতি, ধর্মীয় এবং বীরত্বের স্বাক্ষর বহন করে চলছে ।এই ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনগুলি কুচবিহার জেলা,উত্তর-পূর্ব ভারত তথা অন্যান্য প্রান্তের অন্যতম পুরাসম্পদ।প্রায় সাড়ে চারশো বছর ধরে ইতিহাস বিজড়িত এই সম্পদগুলো আজও আমাদের মনে সদাজাগ্রত।কুচবিহার রাজবংশের কূলদেবতা শিব ।কুচবিহারের মানুষের সংস্কৃতি ও লোকাচারের গুরুত্বপূর্ণ দেবতাও হলেন এই শিব।
তুফানগঞ্জ শহর থেকে ১০কিমি দক্ষিণ পূর্বে বারোকোদালী গ্রামে ইতিহাস বিজড়িত অন্যতম প্রাচীন দামেশ্বর শিবমন্দির অবস্থিত ।বর্তমানে মন্দিরটি দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের অধীনে আছে ।দামেশ্বর শিবের ধর্মীয় মাহাত্ম্য ওই অঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণীয় ।বারোকোদালীর এই দামেশ্বর শিব এই অঞ্চলে বড় মহাদেব নামে পরিচিত এবং পূজিত হন ।জনশ্রুতি অনুসারে জানা যায়,মহারাজা নরনারায়নের ভ্রাতা শুক্লধ্বজ(চিলারায়)এই বিগ্রহটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং একটি মন্দির নির্মাণ করেন।যদিও প্রাচীন মন্দিরের কোন চিহ্ন বর্তমানে নেই। বর্তমানে যে মন্দিরটি রয়েছে সেটা খুব বেশি পুরনো নয়। পশ্চিমমুখী মূলমন্দিরের দেওয়াল এবং ভিত্তি বেদী,মেঝে পাকা হলেও চালা টিনের,একটি ছোট্ট বারান্দা আছে।মন্দিরের গর্ভগৃহের পাশে দামেশ্বর শিবলিঙ্গের অবস্থান। এছাড়াও দক্ষিণা কালী,নবগৌরঙ্গ,নাড়ুগোপাল,শালগ্রাম শিলা মূর্তি ও আছে। বর্তমান পূজারী শচীন্দ্র দেব শর্মা বলেন,সকাল ১০টা(দশ)থেকে এখানে নিত্য পুজো শুরু হয় এবং দুপুর ১টার(একটা) মধ্যে পুজো সম্পন্ন হয়। নিত্য পূজা উপলক্ষে এলাকাবাসী এবং পুণ্যার্থীদের উপস্থিতিতে দামেশ্বর শিব মন্দির প্রাঙ্গন উৎসব মুখর হয়ে ওঠে ।শচীন্দ্রদেব শর্মা বলেন,প্রথা অনুসারে তারা বংশপরম্পরায় এখানে পূজা করে আসছেন । তার পূর্বপুরুষ রতিকান্ত দেবশর্মা-কমলাকান্ত দেবশর্মা- চন্দ্রকান্ত দেবশর্মা-নিশিকান্ত দেবশর্মা আগে পুজো করতেন। বর্তমানে এখানে দেউড়ি হিসেবে নিযুক্ত আছেন বিমল চন্দ্র বর্মন এবং কেয়ারটেকার হিসেবে নিযুক্ত আছেন করেন বর্মন।পূজারী শচীন্দ্র দেব শর্মা আরো বলেন দেবত্র ট্রাস্ট অধীন এই মন্দিরের পূর্বে ১১ বিঘা জমি ছিল এবং বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ বা সোয়া ২ বিঘা। এছাড়াও রয়েছে পুণ্যার্থীদের বিশ্রামঘর ও ভান্ডার ঘর। মূল মন্দিরের উত্তর রয়েছে সুরক্ষা বিহীন ভাবে দাঁড়ানো একটি ত্রিশূল,এর ঠিক পূর্ব পাশেই রয়েছে কিছু প্রাচীন পাথর। প্রাচীন কাঁঠাল( সারাবছর ধরে ফল হয় ) গাছ ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে,রয়েছে প্রাচীন কুয়ো।এককথায় প্রাচীনত্বের ছাপ স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায় মন্দির প্রাঙ্গণে।
Comments
Post a Comment